শিক্ষা দেওয়া হল জলের মধ্যে ঢিল ছোড়ার মত। আমরা যখন একজনকে শিক্ষা দেই এবং তারা আবার অন্যদের শিক্ষা দেয়, তখন তা ঢেউয়ের মতই আমাদের চারপাশের পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।এই কোর্সের ১৪৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত, মারজোরী স্টুয়ার্ট আমাদেরকে কিভাবে শিক্ষকের পরিচর্যা করতে পারেন এই পাঠে আপনাকে তা বুঝতে সাহায্য করবে।যীশু-খ্রীষ্ট তার অনুসারীদের বলেছিলেন, আমার আদেশ অনুযায়ী সমুদয় জাতিকে শিক্ষা দেও... সকল আদেশ মান্য ও অনুসরণ করতে শিক্ষা দেও। এটা অমার ইচ্ছা যা কিনা উপাসনার দ্বারা বহন করা হবে।
আপনি কি জানেন যে, ঈশ্বর চান, যেন আপনি একজন শিক্ষক হন? এই পাঠে আপনি জানতে পারবেন ঈশ্বর কেন তা চান, এবং একজন পরিচালক হিসেবে কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে সবই
আপনি জানতে পারবেন।
এই পাঠে আমরা মথি ২৮:১৯-২০ পদ পড়ব। এই পাঠে আমরা দেখতে পাব যে, ঈশ্বর মানুষকে নিজের বিষয় জানানোর জন্য যে কয়টি পথের পরিকল্পনা করেছেন খ্রীষ্টিয় শিক্ষাদান তাদের একটি। আমরা যেন অন্যদেরও সত্যগুলি জানতে সাহায্য করতে পারি, সে জন্য তিনি আমাদের খ্রীষ্টিয় শিক্ষক হতে সাহায্য করবেন।
এই পাঠে আমরা বাইবেল শিক্ষাদানের ইতিহাস অনুসন্ধান করব। পুরাতন নিয়মের সময়কার লোকদের জীবনে শিক্ষা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নূতন নিয়মের সময়েও শিক্ষা দেওয়ার পরিচর্যা ছিল।
বাইবেলের যুগে লোকদের ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দেওয়ার যেরুপ প্রয়োজন ছিল এখন আমাদেরও সেই একইরুপ প্রয়োজন আছে। মানুষের অন্তর পাপে পূর্ণ, ঈশ্বরের বাক্যই তাদের একমাত্র আশা। এই বাক্য শেখার মাধ্যমে আমরা অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত স্বরুপ হতে পারি। আর আমাদের অবশ্যই অন্যদের শিক্ষা দিতে ইচ্ছুক হতে হবে।
আমরা কেন শিক্ষা দেই এই পাঠে আমরা তাই দেখব। সবাইর জন্যই শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু সবাইকে একই সময়ে একই বিষয় শিক্ষা দেওয়া দরকার হয় না। অনেকের পরিত্রাণ পরিকল্পনা জানা দরকার। অন্যদের খ্রীষ্টিয়ান হিসেবে বেড়ে উঠবার জন্য শিক্ষা দরকার।
আমাদের সবারই একজন শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা দরকার, আবার আমাদের সবাইকে শিক্ষা দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মিক সত্য গ্রহণ করা এবং বিতরণ করা এই উভয়ই শিক্ষাদান পরিচর্যার অন্তর্ভুক্ত।
প্রত্যেকরই শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। সব মানুষের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর চান, প্রত্যেকে তাকে জানবে ও ভালবাসবে। খ্রীষ্টিয় শিক্ষা সম্বন্ধে আমরা যতবেশী জানব তত ভাল শিক্ষক হতে পারব। যাতে শিশু, কিশোর ও বয়স্কদের জীবন পরিবর্তিত হয় সেজন্য আমদের শিক্ষা দেবার ইচ্ছা থাকতে হবে। প্রার্থনা করুন, যেন প্রভু আপনাকে আপনার জানা প্রতিটি লোকের প্রয়োজন বুঝতে সাহায্য করেন। এটিই হল প্রভুর জন্য একজন শিক্ষক হবার প্রথম ধাপ।
প্রত্যেকই শিক্ষা দিতে পারে কেন, আর প্রত্যেকেরই শিক্ষা দেওয়া উচিত কেন, এই পাঠে আপনি তা দেখতে পাবেন। আমরা শিক্ষা দিতে পারি না- এমন কথা আমাদের বলা সাজে না। আপনি যদি ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুসরণ করেন তাহলে তিনি আপনাকে এই কাজে সাহায্য করবেন। তখন আপনি ঈশ্বরের আনন্দ লাভ করতে পারবেন। একজন লোককে তার জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছা জানতে সাহায্য করবার চেয়ে বড় আনন্দ আর হতে পারে না। আপনি এই কাজ করতে পারেন।
শিক্ষা দেবার প্রস্তুতি হল একটি বাগান যত্ন করার মত। প্রথমে সঠিক বার্তাটি নির্বাচন করে সেটাকে একটা শিক্ষা পাঠ হিসেবে দাঁড় করানো হয়। ক্লাসের সময় শিক্ষক তার ছাত্র-ছাত্রীদের হৃদয়ে ঈশ্বরের বাক্যের বীজ বপন করেন।
এই সমস্ত কাজের মানেই হল একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে শিক্ষা দান করা। আর তাহল ছাত্র যেন খ্রীষ্ট যীশুতে পরিপূর্ণ জীবন লাভ করে। একজন শিক্ষক কিন্তু এর চেয়েও বেশী আনন্দ পান, যখন তিনি দেখেন যে, যাদের তিনি শিক্ষা দিয়েছেন তারা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী জীবন যাপন করতে শিখছে।
আমরা চাই আমাদের আত্মিক খাদ্য সুস্বাদু হোক। আমরা এমন এক পথে শিক্ষা দিতে চাই , যেন শিক্ষার্থী আমাদের কথা শুনতে আগ্রহ বোধ করে এবং আত্মিক জীবনে বেড়ে ওঠে। এই জন্যই শিক্ষা দেবার সঠিক পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
পদ্ধতিরগুলোর নিজস্ব কোন আধ্যাত্মিক বা অনাধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্য নাই। কিন্তু সেগুলি আমাদের এমনভাবে আত্মিক সত্য শিক্ষা দিতে সাহায্য করে, যার ফলে সব বয়সের লোকেরাই তা বুঝতে ও গ্রহণ করতে পারে। ঈশ্বরের বাক্য থেকে এই আশ্চর্য সুন্দর সত্যগুলি শিক্ষা দেবার জন্য সবচেয়ে ভাল পদ্ধতিগুলি আমাদের ব্যবহার করা উচিত।
যীশু ঈশ্বরের সত্য শিক্ষা দেবার ক্ষমতা ছিল। শিক্ষা দেবার সময় তিনি তাঁর এই ক্ষমতাই দেখিয়েছেন। তাঁর একটা লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যে পৌছানোর একটা পদ্ধতিও ছিল। আমাদের জন্য তিনি এই দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন।
এই সর্বশেষ পাঠখানি পড়বার সময় যীশুর কাছে প্রার্থনা করুন, যেন তিনি আপনাকে তাঁর কাছ থেকে শিখতে সাহায্য করেন। কোন ব্যক্তিকে শিক্ষা দেবার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন।